কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি গ্রামে দুর দুরান্ত থেকে ছুটে আসছে রসপ্রেমীরা।
স্টাফ রিপোর্টার গোলাম মোস্তফা।।
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যেন এখন রসপ্রেমীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। শীতের সকাল ভোর হতেই খেজুর গাছের রস সংগ্রহের দৃশ্য দেখতে এবং খাঁটি রসের স্বাদ নিতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন মানুষ। শুধু আশপাশের গ্রাম নয়, পাশের উপজেলা ফুলবাড়ী ও নাগেশ্বরী থেকেও প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন এই গ্রামে।
স্থানীয় খলিল মিয়া জানান, ভোরের কুয়াশার সঙ্গে সঙ্গে গাছি যখন হাঁড়ি নামান, তখনই শুরু হয় রস সংগ্রহের প্রতিযোগিতা। তাজা, মিষ্টি ও খাঁটি রসের স্বাদ নিতে মানুষ অপেক্ষা করেন দীর্ঘক্ষণ।
ফুলবাড়ী উপজেলা থেকে আসা এক রসপ্রেমী নিলয় আহমেদ বলেন,“শুনেছি পাথরডুবির রস খুবই সুস্বাদু ও খাঁটি। তাই ভোরবেলায় পরিবার নিয়ে চলে এসেছি। এখানকার রস সত্যিই অতুলনীয়—এমন স্বাদ এখন খুব কম জায়গায় পাওয়া যায়।”
নাগেশ্বরী থেকে আসা দর্শনার্থীর অনুভূতি
নাগেশ্বরী উপজেলা থেকে আসা কলেজ ছাত্র সাদ্দাম বলেন,“প্রতি বছরই রসের মৌসুম এলে একবার হলেও পাথরডুবিতে আসি। এখানকার পরিবেশ, মানুষের আন্তরিকতা আর খেজুরের রস—সব মিলিয়ে এক অন্যরকম অনুভূতি।”
,রাজশাহীর বাঘা থেকে আগত গাছি মোবরক আলী বলেন,প্রতিবছর আমরা রাজশাহী থেকে আসি খেজুর গাছ কাটার জন্য, “শীতের এই সময়টাই আমাদের সবচেয়ে ব্যস্ত সময়। ভোর রাত থেকে গাছে উঠে রস নামাতে হয়। মানুষ দূরদূরান্ত থেকে এসে রস কিনছে—এতে আমাদেরও ভালো লাগে। তবে আমরা সবসময় চেষ্টা করি যেন খাঁটি ও পরিষ্কার রসই মানুষের হাতে পৌঁছায়।”
স্থানীয় এক বাসিন্দাআবু সাইদ বলেন,
“পাথরডুবির রস এখন পুরো এলাকায় পরিচিত হয়ে উঠেছে। এতে একদিকে যেমন গ্রামটি পরিচিতি পাচ্ছে, অন্যদিকে স্থানীয় মানুষের আয়ও বাড়ছে। প্রশাসনের সহযোগিতা পেলে এটি আরও বড় পর্যায়ে পরিচিত হতে পারে।”
শীতের সকালে কুয়াশা ভেদ করে খেজুরের মিষ্টি রস আর মানুষের কোলাহলে মুখর হয়ে উঠেছে পাথরডুবি গ্রাম। ঐতিহ্যবাহী এই রসের সুনাম ছড়িয়ে পড়ছে দূর-দূরান্তে। স্থানীয়দের আশা, যথাযথ উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ হবে এবং এলাকার অর্থনীতিতেও নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে।