1. news@dainikkurigramjanopad.online : দৈনিক কুড়িগ্রাম জনপথ :
  2. info@www.dainikkurigramjanopad.online : দৈনিক কুড়িগ্রাম জনপথ :
বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
পাথরডুবি গ্রামে দুর দুরান্ত থেকে আসছে রসপ্রেমীরা। কুড়িগ্রামে নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ব্রাকের কর্মশালা। কুড়িগ্রাম-১ আসনে ছয় প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল, নির্বাচনী মাঠে উত্তাপ। কুড়িগ্রাম -১ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মো: আনোয়ারুল ইসলামের মনোনয়ন দাখিল। কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচির উদ্বোধন। ।। কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে বাড়ছে শীত–কুয়াশার দাপট, আগুন জ্বালিয়ে ঠান্ডা নিবারণের চেষ্টা। কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি, ঠান্ডাজনিত রোগে কাবু শিশু ও বৃদ্ধরা। ভূরুঙ্গামারীতে শিশুধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ,অভিযুক্তর কাছে টাকা নিয়ে মসজিদ ও পানি নিষ্কাশনের কাজে ব্যয়। বিয়ের সাজে নয়, কাফনের চাদরে ফারুক :মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পাথর ডুবি। ভুরুঙ্গামারীতে বাস-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে যুবক নিহত, একজন গুরুতর আহত।

ইসলামী জীবনে শোকর ও ছবরের গুরুত্ব

  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১৬৬ বার পড়া হয়েছে
১) শোকর: সংজ্ঞা ও মনস্তাত্ত্বিক কাঠামো
শোকর হল আল্লাহর দেয়া নিয়ামতকে উৎস অনুযায়ী চিন্তা করা, হৃদয়ে কৃতজ্ঞতা ও প্রফুল্লতা অনুভব করা, এবং যবানে ও কর্মে সেই কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ করা। এই তিনটি স্তরের সুষমতা ছাড়া শোকর আধ্যাত্মিকভাবে অসম্পূর্ণ থাকে। শুধু মুখে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা পর্যাপ্ত নয় বরং হৃদয় দিয়ে স্বীকার করে আচার-ব্যবহারে এর প্রকাশ জরুরি।
২) তত্ত্বগত ভিত্তি (কুরআন ও সুন্নাহ) — সংক্ষিপ্ত ও নিবিড় ব্যাখ্যা
আল্লাহ বলেন: «وَإِن تَعُدُّوا نِعْمَةَ اللَّهِ لَا تُحْصُوهَا» — তুমি যদি আল্লাহর নিয়ামত গোনার চেষ্টা করো, শেষ করতে পারবে না। (সূরা নাহল) — এটিই শেখায় যে নিয়ামতের বহুমাত্রিকতা আমাদের কৃতজ্ঞতাকে আরও গভীর করে।
আল্লাহ বলেন: «إِن تَشْكُرُوا لَأَزِيدَنَّكُمْ» — যদি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, আমি অবশ্যই তোমাকে বাড়াব। (সূরা ইবরাহীম) — এখানে কৃতজ্ঞতা ও বরকতের মধ্যে সরাসরি কারণ-ফল সম্পর্ক নির্দেশিত।
হাদীসে আছে যে মু’মিনের অবস্থা বিস্ময়কর: ভালো অবস্থায় কৃতজ্ঞ, বিপদে ধৈর্য — প্রতিটি অবস্থাই তার জন্য কল্যাণ।
(সাহিহ মুসলিম-এর মর্ম)
এই আয়াত ও হাদিসগুলোর আলোয় শোকর ধর্মীয় মাত্রা ছাড়িয়ে বরকত-নিয়মের এক কার্যকর “আত্মচালিত” নীতি হয়ে ওঠে: আল্লাহর নিয়ামতকে স্বীকৃতি দিলে নিয়ামত বাড়ে; এটাই কিয়ামতের পূর্বে বিশ্বব্যবস্থার এক অনুগত নীতিশাস্রীয় নিয়ম।
৩) শোকরের স্তরগুলো — বিশ্লেষণ ও প্রভাব
১. চিন্তা ও উপলব্ধি: নিয়ামতকে সঠিক উৎস — আল্লাহ — হিসেবে চিহ্নিত করা; নিয়ামতের ক্ষুদ্র ও বড় দিকসমূহ সম্পর্কে চিন্তা করা।
প্রভাব: প্রশংসা ও বিনয় জন্মায়; অহংকার কমে।
২. হৃদয়ের উৎসব: অন্তরে আনন্দ অনুভব, কৃতজ্ঞতার আবেগ প্রকাশ।
প্রভাব: ইমানে কোমলতা, ভরসা ও শান্তি বৃদ্ধি।
৩. কর্ম ও ব্যবহার: নিয়ামতকে আল্লাহর ইবাদতে ব্যবহার করা — দান, ঈমানি কাজ, হারাম থেকে বিরত থাকা ইত্যাদি।
প্রভাব: সমাজে নৈতিক উদাহরণ, বৈধ বরকত প্রবাহ।
৪. শোকর বনাম সবর — সম্পর্ক ও সমন্বয়
শোকর ও সবর অপরিহার্যভাবে পরস্পর সম্পূরক। সবরকে যখন কেউ ধৈর্য্য ও সংগ্রহের দৃঢ়তা হিসেবে ধরে—বিশেষ করে কষ্টে—তার মধ্যে প্রকৃত শোকর অর্জিত হয় যখন তিনি বলে ওঠেন: “এটাও আল্লাহর হতে।” মানে: শোকর শুধু সুখে নয়, কষ্টতেও আল্লাহকে চিনতে পারার নাম। ইসলামিক তত্ত্বে—শোকর ও সবর একই মুদ্রার দুই পিঠ: দান-প্রাপ্তিতে কৃতজ্ঞ হওয়া ও বিপদে ধৈর্য রাখাই বিশ্বাসের পূর্ণতা।
৫. নৈতিক ও সমাজতাত্ত্বিক মাত্রা:
শোকর ব্যক্তির অন্তরে ন্যায়, নম্রতা ও দানশীলতা সৃষ্টি করে। এতে সম্পদ ও প্রতিভা সমাজের কল্যাণে বণ্টিত হয়, বরকত বাড়ে।
ক্ষমা, কৃতজ্ঞতা ও পরোক্ষভাবে সম্পর্কের গুণ উন্নত হয় (মানবিক সংহতি)। অহংকার-চেতনা হ্রাস পায়, ফলে সামাজিক দুর্ব্যবহার কমে।
৬. শোকর অনুশীলনের ব্যবহারিক পথ (প্রাত্যহিক ও আধ্যাত্মিক রুটিন)
নীচে ব্যবহারিক, পর্যায়ক্রমিক এবং গভীরতার ভিন্ন স্তরের অনুশীলন দিলাম — নিজ অবস্থান অনুযায়ী গ্রহণ/অপেক্ষা করুন:
প্রাত্যহিক (সোজা ও কার্যকর):
প্রতিদিন সকালে/রাতে ৩টি নিয়ামত লিখুন — কেন তা নিয়ামত, কিভাবে তা আল্লাহ থেকে ইচ্ছা/সম্ভব হলো — চিন্তা করুন।‌ খাবার বা নতুন সুবিধা পাওয়া মাত্র অল্প মোনাজাতে
‘আলহামদুলিল্লাহ’ ও বলা ও দোয়া করা।
সপ্তাহে একবার “নিয়ত ও ব্যবহার রিভিউ” — যেখানে দেখবেন আপনি কি নিয়ামতকে আল্লাহর অনুগত কাজে ব্যবহার করেছেন কিনা।
মধ্যবর্তী (আচরণে পরিবর্তন): নিয়মিত সাদাকে বাড়ানো (সদকা/ইতেকাফ/সময়ানুযায়ী ইবাদত)। খাদ্য/সময়/অর্থ ইত্যাদি বিষয়ে সীমাবদ্ধতা করে দেখুন — অভিজ্ঞতা থেকে কৃতজ্ঞতা জাগে (যেমন ইচ্ছাকৃত আসকার বা ঐকান্তিক রোজা)।
গভীর (আধ্যাত্মিক অনুশীলন):
প্রতিদিন এক নীরব সময় নির্দিষ্ট করে আল্লাহর নিয়ামত স্মরণ ও বিবেচনা।
কুরআন আয়াত পাঠে ধ্যান: নিয়ামত-সংক্রান্ত আয়াতগুলি ধীর গতিতে পড়া ও মর্মে ভাবা।
দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প: মাসিক/বার্ষিক “বরকত রিভিউ” — কোন কাজ আল্লাহর জন্য হয়েছে, কোনটা হয়নি?
৭. সংকটের সময় শোকর — চ্যালেঞ্জ ও প্র্যাকটিক্যাল কৌশল
কষ্টে শোকর করা সবচেয়ে বেশি পরীক্ষিত শোকর। কৌশলগুলো:
কষ্টের মধ্যে কি শিক্ষা বা পরবর্তী কল্যাণ নিহিত আছে — ছোট ছোট পয়েন্ট ধরার অভ্যাস গঠন।
ধৈর্য্যের তালিকা: অতীতের যে কষ্টগুলো পরে কল্যাণে বদলে গিয়েছে সেগুলো মনে করে শক্তি নিন।
দোয়া ও আত্মসমর্পণ: “اللهم اجعلني من الصابرين والشاكرين” — এই দোয়া মনের ভার হালকা করে।
৮. সংক্ষিপ্ত দোয়া:
“اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ الشَّاكِرِين
হে আল্লাহ আমাকে শোকরকারীদের অন্তরভূক্ত করো।
“اَلْحَمْدُ لِلَّهِ عَلَى كُلِّ حَالٍ” — প্রতিটা অবস্থায় আল্লাহর কৃতজ্ঞ
শোকর কেবল আচার নয় — এটা চিন্তা, অনুভব ও আচরণের সমন্বিত জীবনধারা। যারা এ দিকগুলোকে সচেতনভাবে অনুশীলন করে, তারা কেবল আল্লাহর কাছে বরকত ও নৈকট্যই পায় না; তাদের অন্তর্জগত শান্তি, সম্পর্কগত কল্যাণ এবং সমাজ-উপযোগী আচারও দৃঢ় হয়। শুরু করুন ছোট—প্রতিদিন তিনটি নিয়ামত চিন্তা করে লিখুন; তারপর ধীরে ধীরে তা হৃদয় ও আচার আচরণে নিয়ে আসুন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমাদেরকে তার শোকরগুজার বান্দা হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।।
আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট