
ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তথ্য সংগ্রহকালে সাংবাদিক মো. মাইদুল ইসলাম হামলার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় হাসপাতালের পরিসংখ্যানবিদ মো. আরিফুল ইসলাম আপেল ও তাঁর নেতৃত্বাধীন এক অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২০ অক্টোবর সকাল আনুমানিক ১১টার সময় হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে তথ্য সংগ্রহের সময় এক ব্যক্তি সাংবাদিককে বাধা দেন এবং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পরের দিন (২১ অক্টোবর) মাইদুল হাসপাতালে ভর্তি এক প্রতিবেশীকে দেখতে গেলে ডেঙ্গু-সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে আপেল ও সেলিম নামের এক ব্যক্তির দ্বারা আক্রমণের শিকার হন। সেখানে জাকির ও মেহেদীও এসে যুক্ত হয় এবং আপেলের নেতৃত্বে তারা তাঁকে টেনে-হেঁচড়ে হাসপাতালের দিকে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং আপেল মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা চালান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, উপস্থিত লোকজন এগিয়ে এলে সাংবাদিককে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে কর্মচারী লিমন ব্যাপারী, সোহাগ মিয়া, রুহুল রাসেলসহ অনেকে ঘটনাস্থলে ছিলেন। পুলিশ কর্মকর্তা এসআই এনামুল হক উভয় পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
সাংবাদিক মাইদুল অভিযোগ করেন, “হাসপাতালের প্রভাবশালী মহল ও দালালচক্র আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হেনস্থা করেছে। তারা তথ্য প্রকাশ ঠেকাতে এই আক্রমণ ও হুমকি দিয়েছে।” ঘটনার পর থেকে তিনি এবং তার পরিবার বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকির মুখে পড়েছেন।
এক ব্যক্তি অভিযোগ করে জানান, ভুরুঙ্গামারী হাসপাতালে কোনো পুলিশ কেস এর সার্টিফিকেট নিতে গেলে প্রথমে দালাল ধরতে হয়। এরপড়ে দালাল রা টাকার উপর ইনজুরীর ধারা বসিয়ে দেন। যার কারনে নিরঅপরাধ লোকেরা মিথ্যে মামলায় পড়ে হয়রানির শিকার হচ্ছে। দয়া করে ভুরুঙ্গামারী হাসপাতালের কতৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করবো এবিষয় টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন এবং দালালের দৌরাত্ব বন্ধ করবেন।
অপর ব্যক্তি বলেন, ভূরুঙ্গামারী হাসপাতালে বেশ কয়েকদিন থেকে দালালদের দূরত্ব বেড়ে গিয়েছে, হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যারা আছে সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি এ সকল দালালদেরকে হাসপাতালে ঢুকতে না দেওয়ার জন্য।
ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাইদুল ইসলাম ‘তালাশ বিডি’ ও ‘উলিপুর ডটকম’-এর ভূরুঙ্গামারী প্রতিনিধি এবং ‘হামার কুড়িগ্রাম’-এর নিয়মিত লেখক। দীর্ঘদিন ধরে তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক অনিয়ম নিয়ে নির্ভীক সাংবাদিকতা করে আসছেন।
স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ, জনপ্রতিনিধি ও সচেতন নাগরিকরা হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। তারা বলেন, “একজন সাংবাদিকের ওপর হামলা মানে জনগণের জানার অধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর আঘাত।”